বর্তমান যুগে, মানসিক চাপ, লাইফস্টাইলের সমস্যা ইত্য়াদি বিভিন্ন কারণে বিছানায় সঙ্গিনীদের সুখি করতে পারেন না অধিকাংশ পুরুষ। অনেক মহিলাই অভিযোগ করে থাকেন, তাঁদের সঙ্গীদের স্ট্যামিনা ভীষণ কম। এই অনেক পুরুষ হীনমন্যতায়ও ভোগেন।
তবে, পর্ন তারকাদেরা বিষয়টাই আলাদা। ঘন্টার পর ঘন্টা রে চলা পর্ন ফিল্মের শ্যুটিং চবাকালীন, তাঁরা তাঁদের ইরেকশন ধরে রাখেন। কীকরে তারা এত দীর্ঘ সময় নিজেদের ইরেকশন ধরে রাখেন – সব পুরুষেরই মনে অন্তত একবার এই প্রশ্ন উঠেছেই। এবার ফাঁস হল সেই গোপন রহস্য। পর্ন তারকারা নিজেরাই জানালেন সেই গোপন কথা, যা তাঁদের দীর্ঘক্ষণ ইরেকশন বজায় রাখতে সাহায্য করে –
মোটেও সহজ নয়
পর্ন তারকা পিটার নর্থ জানিয়েছেন, সেটে পর্ন তারকারা খুব সহজেই নিজেদের ইরেকশন ধরে রাখতে পারেন, এমনটা ভাবা ঠিক নয়। কারণ, এটা মোটেও সহজ নয়। বরং, পুরুষ পর্ন তারকাদের ইরেকশনের সমস্যায় ভোগা খুবই সাধারণ বিষয়। অনেক পুরুষ পর্ন তারকারই কেরিয়ারের প্রথম দিকে বেশ কিছু ‘ব্যর্থ’ দৃশ্যের অভিজ্ঞতা হয়।
উদ্ধারে ভায়াগ্রা এবং সিয়ালিস
বেশিরভাগ পুরুষ তারকারাই ভায়াগ্রা এবং সিয়ালিসের মতো ইরেকটাইল ডিসফাংশনের ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে, সেটে উত্তেজনা ধরে রাখার জন্য ইনজেকশনও নিয়ে থাকেন। অনেক পর্ন আবার লিঙ্গ বর্ধক পাম্পও ব্যবহার করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পর্ণ পুরুষ অভিনেতাদের, শুটিংয়ের আগে একটি ওষুধ খাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।
এই ওষুধের ক্ষতি
সিয়ালিস বা ভায়াগ্রা উপযুক্ত মাত্রায় এবং নির্দিষ্ট কিছু চিকিৎসাজনিত অবস্থার অধীনে গ্রহণ করার জন্য পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে, দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলি ব্যবহার করলে মানব শরীরে অনেক ক্ষতি হতে পারে। বুকে ব্যথা, ঘন ঘন বমি বমি ভাব, আনফিট বোধ হওয়া, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, চোখের সমস্যা এবং হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, শ্রবণের সমস্যা এবং হঠাৎ শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার মতো গুরুতর সমস্যা হতে পারে।
ওষুধে হারিয়ে যায় স্বাভাবিক ক্ষমতা
প্রাক্তন পর্নস্টার ক্রিস্টোফার জিশেগ নিজেই এই উত্তেজনা ধরে রাখার ওষুধের ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে তিনি এই ওষুধ গ্রহণ করেছিলেন। এরমধ্যে প্রিয়াপিজমের সমস্যা নিয়ে তাঁকে তিনবার হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যেতে হয়েছে। যৌনতার পরও বেশ কয়েক ঘন্টা লিঙ্গ শক্ত হয়ে থাকাকে প্রিয়াপিজম বলে। এই প্রাক্তন পর্ন তারকা আরও বলেছেন, এই ধরমের ওষুধ টানা খেয়ে গেলে, ইরেকশন হওয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতাই হারিয়ে যেতে পারে।
তাহলে উপায়?
পর্ন তারকা অ্যারন থম্পসন, পর্নের জগতে স্মল হ্যান্ডস নামে পরিচিত। তিনি জানিয়েছেন, ইরেকশন ধরে রাখাটা নির্ভর করে ফিট থাকার উপরে। তিনি নিজে ফিট থাকার জন্য প্যালিও ডায়েট অনুসরণ করেন এবং প্রতিদিন শরীর চর্চা করে থাকেন। সেই সঙ্গে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ জলপান করেন, সময়মতো ঘুমান। তাঁর মতে সঙ্গিনীকে বিছানায় খুশি করতে চাইলে, প্রত্যেক পুরুষের উচিত, তাদের খাদ্য এবং ফিটনেসের উপর ফোকাস করা। এটাই ম্যাজিক সিক্রেট।
প্যালিও ডায়েট কী?
প্যালিও বা প্যালিওলিথিক ডায়েট হল এমন এক ধরণের খাদ্যাভ্যাস, যেখানে মনে করা হয়, প্যালিওলিথিক এরা বা প্রস্তর যুগে মানুষের যা খেত, বর্তমান সময়েও মানুষের প্রধানত তাই খাওয়া উচিত। অর্থাৎ, এই খাদ্যাভ্যাসে এমন ধরণের খাবার খাওয়ার কথা বলা হয়, শিকার করে বা কুড়িয়ে পাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে – সবুজ শাক, স্থানীয় শাকসবজি, বাদাম, মাছ, মাংস এবং ফলের বীজ। এই খাদ্যাভ্যাস যারা মেনে চলেন, তাঁরা আধুনিক যুগের প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই খান না।
দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ‘ফোকাস’
অ্যারন থম্পসন ওরফে স্মল হ্যান্ডস আরও জানিয়েছেন, রেকশন ধরে রাখাটা নির্ভর করে পুরুষের ফোকাস বা মনোযোগের উপরও। যৌনতার সময়, শুধুমাত্র নিজের ও নিজের সঙ্গিনীর দেহসুখের প্রতি মনোযোগ নিবিষ্ট রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। থম্পসন বলেছেন, যৌনতার মুহুর্তে আর কিছুই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত নয়। বাসে ভাড়া বাড়া, ট্র্যাফিকের জ্যাম, বাড়িতে নোংরা হয়ে থাকা, অফিসে বসের চাপ – সব ভুলে সেই সময়ে যা ঘটছে তাই নিয়ে সত্যিকারের আবেশে নিমগ্ন হয়ে যেতে হবে।
এবং হস্তমৈথুন
পর্ন তারকারা আরও জানিয়েছেন, যেসব পুরুষ, কিশোর বয়স থেকেই হস্তমৈথুন করা শুরু করে, তারা সাধারণত বিছানায় দীর্ঘসময় টিকে থাকতে পারে। হস্তমৈথুন করে করে তারা সহজেই নিজেদের ইরেকশনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তারা জানে, কখন থামতে হবে, কখন চালিয়ে যেতে হবে। এটাই তাদের দীর্ঘসময় ইরেকশন ধরে রাখতে এবং পারফরম্যান্স ভাল করতে সাহায্য করে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।